মহানবী কর্তৃক মাছির এক পাখায় জীবাণু ও আরেক পাখায় প্রতিষেধক - এমন ডাহা মিথ্যা ও উদ্ভট পরামর্শ দান

♨ ভূমিকাঃ
বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের বৈরিতার সম্পর্ক চিরন্তন কেননা বিজ্ঞান বিশ্বাস করে সন্দেহ ও সংশয়কে ভিত্তি করে রহস্যমোচনে পক্ষান্তরে ধর্ম বিশ্বাস করে চোখ বন্ধ করে সকল রহস্যকে আল্লাহর কাজ বলে ধরে নিতে। অর্থাৎ ধর্মের মাধ্যমে কখনই রহস্যমোচন হতে পারে না। এখানেই বিজ্ঞান জয়যুক্ত এবং ধর্ম পরাজিত। আজকে আমরা আলোচনা করব মাছির এক পাখায় জীবাণু ও আরেক পাখায় প্রতিষেধক আছে  - নবী মোহাম্মদের এমন বক্তব্য আসলেই বৈজ্ঞানিক কী না। 
 সর্বশ্রেষ্ঠ হাদীস গ্রন্থ বলে অভিহিত বুখারী শরীফে রয়েছে -
Narrated Abu Huraira:
The Prophet (ﷺ) said "If a house fly falls in the drink of anyone of you, he should dip it (in the drink) and take it out, for one of its wings has a disease and the other has the cure for the disease."
সূত্রঃ http://quranx.com/Hadith/Bukhari/DarusSalam/Hadith-3320/
বাংলা অনুবাদঃ আবু হুরাইরা বর্ণিত, মহানবী (স) বলেন “যদি তোমাদের কোন পানপাত্রে হাউজ ফ্লাই বা মাছি পড়ে যায় তবে তোমরা সেটিকে সেই পানীয়তে সম্পূর্ণ ডুবিয়ে আবার তুলে নেবে কারণ মাছির এক পাখায় আছে অসুখ আর আরেক পাখায় আছে প্রতিষেধক।
এহেন বক্তব্য চরম হাস্যকর একটি বক্তব্য! কারণ -
✅ ১) মাছি পানপাত্রের তরলের মধ্যে সোজাভাবে পড়লে মাছির ২ পাখাই তরলের সংস্পর্শে আসে কেননা তারা একই আনুভূমিক তলে ২ পাশে বিস্তৃত। আর বাঁকাভাবে পড়লে মাছি কিছুটা ডুবে যায়, এতে ২ পাখাই তরলের সংস্পর্শে আসে।
✅ ২) মাছি যদি তরলের মধ্যে পুরোটাই পড়ে, তাহলে মাছিকে পুনরায় ডোবানো একেবারেই অনর্থক।
✅ ৩) মাছির কোন পাখায় অসুখ আর কোন পাখায় তার প্রতিষেধক থাকে – এটি সম্পর্কে হাদীসে কোন তথ্য নেই এবং তথ্য দেওয়ার আসলে কোন অবস্থাও নেই। 
✅ ৪) মাছির দেহের ২ পাশে ২টি পাখা যাদের অ্যানাটমি হুবুহু একই রকম। সেক্ষেত্রে, ২টি পাখার ২ ধরনের আলাদা আলাদা ফাংশন কখনই থাকতে পারে না। যেমনঃ আমাদের ২ হাত, ২ পা, ২ চোখ, ২ কান – প্রত্যেক জোড়ার ফাংশন অভিন্ন।
✅ ৫) মাছির পাখার কাজ উড়তে সাহায্য করা, এর বেশি কিছু নয়। এতে পাতলা মেমব্রেন/পর্দা ও কিছু ভেইন ও নার্ভ ছাড়া কিছুই নেই। বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকে প্রতিরক্ষার অ্যান্টিবডি মাছির মূল দেহে আছে, পাখায় নেই।  
✅ ৬) মাছি যখন আবর্জনায় বসে, তখন আবর্জনাগুলো উভয় পাখাতেই লাগে অর্থাৎ উভয় পাখাতেই জীবাণু থাকে। এমন নয় যে আবর্জনা তথা জীবাণু এক পাখায় লাগল এবং অপর পাখায় লাগল না।
আজকে এই হাদীসের সঙ্গে সম্পর্কিত ৮টি ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে প্রমাণ করে দেব - মাছির এক পাখায় অ্যান্টিডোট থাকে নবী মোহাম্মদের এমন বক্তব্য বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পূর্ণই ভুল। আসুন শুরু করা যাক আজকের আলোচনা।
 ইস্যু নং ০১
 এই হাদীসের বর্ণনা দিতে যেয়ে শায়খ আল ইসলাম বলে অভিহিত হাদীস বর্ণনাকারী ইসলামিক আলেম ইবনে হাজার বলেনঃ
I found nothing among the variants to pinpoint the wing that carries the antidote but one of the Ulema said he observed that the fly protects itself with its left wing so it can be deduced that the right one is the one with the antidote.
সূত্রঃ http://seekershub.org/ans-blog/2011/07/02/does-
modern-science-confirm-the-hadith-that-says-there-is-an-antidote-in-the-wing-of-a-fly/
অর্থাৎ মাছির কোন পাখায় প্রতিষেধক বা অ্যান্টিডোট আছে সেটি নিয়ে গবেষণা করে তিনি কিছুই পাননি কিন্তু কোন এক উলামা বলেছেন, যেহেতু মাছি বাম পাখা দিয়ে আত্মরক্ষা করে সেহেতু নিশ্চয়ই এখান থেকে বের করা যায় যে, মাছির ডান পাখায় অ্যান্টিডোট রয়েছে।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, মাছি প্রতিরক্ষার কাজে উভয় পাখাই সমান ব্যবহার করে। উভয় পাখার গঠন ও ফাংশন অভিন্ন। 
নিজের ক্ষেত্রে চিন্তা করে দেখুন, কোন মানুষ যদি আপনাকে মারতে উদ্যত হয়, আপনি কি শুধু বাম হাত দিয়ে তার মার প্রতিহত করবেন ? কিংবা শুধু ডান হাত দিয়ে সেই মারগুলোকে প্রতিহত করবেন ? নাকি ২ হাতই একই সাথে ব্যবহার করবেন যখন যেটা প্রযোজ্য হয় ? – অবশ্যই ২ হাতই প্রয়োজন মোতাবেক একসাথে ব্যবহার করবেন।
তথাকথিত উলেমা ডান পাখাকে অ্যান্টিডোট ধারণকারী ও বাম পাখাকে জীবাণু ধারণকারী হিশেবে সিদ্ধান্ত দেওয়ার কারণ – পৃথিবীতে ডানহাতি মানুষ বেশি বলে ডানহাতের পক্ষে একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মানুষের অন্ধ পক্ষপাতিত্ব কাজ করেছে এবং বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ তাই সংখ্যাগরিষ্ঠের ‘ডান’ হাত কিংবা ‘ডান দিক’ কেই ভালো এবং ‘বাম হাত’ বা  ‘বামদিক’ কে খারাপ হিসেবে গণ্য করেছে।
সিদ্ধান্তঃ ইসলামিক আলেমদের কাছে মাছি নিয়ে নবী মোহাম্মদের দাবীর সপক্ষে কোন গবেষণালব্ধ বক্তব্য বা ব্যাখ্যা নেই।
 ইস্যু নং ০২
 গোঁজামিল দিয়ে কোরানের তথাকথিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দানকারী কতিপয় মুসলিম এই হাদীসটিকে প্রমাণিত করার জন্য বলেন – মাছিতে নাকি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী ভাইরাস তথা ব্যাকটেরিওফাজ থাকে, তাই মাছি পানীয়তে ডোবালে আরোগ্য লাভ হয়।
এমন দাবী পুরোই একটি হাস্যকর ও উদ্ভট দাবি। কারণ –
✅ ১) মাছি থেকে বিভিন্ন প্যারাসাইটিক অসুখ ছড়াতে পারে যেগুলো ব্যাকটেরিয়াল অসুখ নয় বরং ভাইরাল, ফাংগাল ও প্যারাসাইটিক অসুখ। যেমন –
প্যারাসাইটিক অসুখঃ Pinworm, Tapeworm, Amebic Dysentery, Giardia Enteritis
ভাইরাল অসুখঃ, Poliomyelitis, Viral Gastroenteritis, Enteric Hepatitis ইত্যাদি।
ফাঙ্গাল অসুখঃ Mycoses
সূত্রঃ http://www.who.int/water_sanitation_health/resources/vector302to323.pdf
ব্যাকটেরিওফাজের সংজ্ঞা থেকে জানা যায় এটি একধরনের ভাইরাস যা ব্যাকটেরিয়া মারতে পারে কিন্তু ভাইরাস, ফাঙ্গাস ও প্যারাসাইট মারতে পারে না। আসুন দেখি –
A bacteriophage /ˈbækˈtɪər.i.oʊˌfeɪdʒ/, also known informally as a phage /ˈfeɪdʒ/, is a virus that infects and replicates within a bacterium
সূত্রঃ https://en.wikipedia.org/wiki/Bacteriophage
ফলে, মাছির মাধ্যমে পানীয়তে মেশা ভাইরাস, ফাংগাস ও প্যারাসাইটকে কোন ব্যাকটেরিওফেজিক ভাইরাস ধ্বংস করতে পারবে না। এই ১টি পয়েন্টেই এই হাদীসের অসারতা বা মিথ্যাচার সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ হয়ে যায়, আর কোন যুক্তি দেওয়া লাগে না। তবে আমাদের কাছে আরো অনেক যুক্তিই আছে। আসুন সেগুলো দেখি। 
✅ ২) মাছির পর্দার মত পাখা আকারে খুবই ছোট ও পুরুত্বের দিক দিয়ে খুবই পাতলা। ওই  পাখাতে কী ব্যাকটেরিয়া মারার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যাকটেরিওফাজ ভাইরাস থাকা সম্ভব ? – আমরা বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক জীবনের বিভিন্ন সময় খেতে খেতে এটুকু জেনে গেছি যে এগুলোর উপাদান অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ১০০ মিলিগ্রামের বেশি হয় এবং অন্তত ৫-৭ দিনের কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। ফলে, শুধুমাত্র কমন সেন্স থেকেই প্রমাণিত হয় – মাছির পাখাতে জীবাণু মারতে পর্যাপ্ত ব্যাকটেরিওফাজ থাকা সম্ভব নয়।
শুধু তাই নয়, একটি মাছির দেহ থেকে যদি অন্যান্য পদার্থগুলো আলাদা করে শুধুমাত্র ব্যাকটেরিওফাজকে সংগ্রহ করতে হয় তবে এর জন্য বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পন্থা অনুসরণ করা লাগবে।
যদি মাছি পানীয়তে পড়ে, তাহলে তো মাছি পানীয়তে আংশিক বা সম্পূর্ণ ডুবেই গেল, একে পুনরায় ডোবানোর কোন মানে থাকে না আর যদি পুনরায় ডোবানো হয়ও তবে পানীয়তে ব্যাকটেরিওফাজ যেমন মিশবে, তেমনি অন্যান্য ক্ষতিকর জীবাণু ও পদার্থও মিশবে। মাছি ১ম বার ডোবার কারণে জীবাণু যতটা পানীয়তে মিশেছে, ২য় বার ডোবানোতে আরো বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ার কারণে আরো বেশি পরিমাণ জীবাণু পানীয়তে মিশবে যা হবে আরো বেশি ক্ষতিকর।
 ইস্যু নং ০৩
 কতিপয় অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী অর্ধশিক্ষিত মুসলিম ‘নেচার’ নামক সাইটে ‘সিকাডা’ নিয়ে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলের মাধ্যমে গোঁজামিল দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে – মাছির পাখা ব্যাকটেরিয়া মারতে পারে। আসুন দেখি –
সূত্রঃ https://www.nature.com/news/insect-wings-shred-bacteria-to-pieces-1.12533
বাস্তবে, সিকাডা আর হাউজ ফ্লাই আলাদা আলাদা পতঙ্গ এবং তাদের পাখাও সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের। সিকাডায় আছে ষড়ভুজসম্পন্ন ন্যানোপিলার (Hexagonal Nanopillars) এবং ভোঁতা ধরনের স্পাইক (Blunted Spike) –
The clanger cicada (Psaltoda claripennis) is a locust-like insect whose wings are covered by a vast hexagonal array of 'nanopillars' — blunted spikes on a similar size scale to bacteria
পক্ষান্তরে
✅ ১) ষড়ভুজসম্পন্ন ন্যানোপিলার হাউজ ফ্লাইয়ের নেই এবং
✅ ২) যেখানে সিকাডার ভোঁতা এবং ঊর্ধ্বমুখী স্পাইক আছে সেখানে হাউজফ্লাইয়ের আছে সূক্ষ্ম (Smoother & Fine hairs) এবং নিম্নমুখীভাবে বক্র স্পাইক (Downwardly Curled Spikes)। তাই বলা হয়েছে –
If you examine a housefly wing under a microscope you will see that a housefly's wing structure is different to that of the cicada's wing. The housefly wing is smoother and has fine hairs which are curled downwards not like the upward pointing spikes of the cicada.
সূত্রঃ http://animals.howstuffworks.com/insects/housefly2.htm
 ইস্যু নং ০৪
 ইসলামের পক্ষে সাফাই গাইতে আসা অর্ধশিক্ষিত মুসলিমেরা দাবি করেন –
Only in modern times was it discovered that the common fly carried parasitic pathogens for many diseases including malaria, typhoid fever, cholera, and others. It was also discovered that the fly carried parasitic bacteriophagic fungi capable of fighting the germs of all these diseases.
সূত্রঃ https://archive.islamonline.net/?p=6117
এটি একটি ডাহা মিথ্যাচার কেননা,
✅ ১) হাউজ ফ্লাই কখনো ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে না, এটি বহন করে শুধুমাত্র অ্যানোফিলিস প্রজাতির মশা।
সূত্রঃ http://archive.is/U4B5i
✅ ২) Parasitic Bacteriophagic Fungi বলে বিজ্ঞানে কোন টার্ম নেই। ব্যাকটেরিওফাজ শুধুমাত্রই ভাইরাস। ব্যাকটেরিওফাজ কখনই ফাংগাস কিংবা প্যারাসাইট নয়। টার্মটি হাস্যকর ও উদ্ভট কারণ এতে বলা হচ্ছে, এমন একটা ফাংগাসের কথা যা একাধারে প্যারাসাইট এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী – যার বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই। 
 ইস্যু নং ০৫
 আরেকদল গোঁজামিলকারী দাবি করে –
if the fly did not carry some sort of protection in the form of an antidote or immunity, it would perish from its own poisonous burden and there would be no fly left in the world.
সূত্রঃ http://seekershub.org/ans-blog/2011/07/02/does-modern-science-confirm-the-hadith-that-says-there-is-an-antidote-in-the-wing-of-a-fly
কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, মাছিরা কখনো ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় না, তারা শুধুমাত্রই ব্যাকটেরিয়ার পোষক (Carrier) হিশেবে কাজ করে যার অর্থ হচ্ছে - তারা জীবাণু বহন করে কিন্তু সেই জীবাণু দ্বারা কোন অসুখে আক্রান্ত হয় না। যারা মাছির রোগবিস্তৃতির পদ্ধতি (Pathogenesis) সম্পর্কে জানেন না, তারাই এমন হাস্যকর অবৈজ্ঞানিক বক্তব্য দেন।
মাছির রোগবিস্তৃতির পদ্ধতি হল এর নারী প্রজাতি যখন ডিম পাড়ার জন্য মল ও বর্জ্যের ওপর বসে তখন সেই মল-বর্জ্য তথা জীবাণু মাছির পায়ে ও মুখে লেগে যায়। সেই মাছিই আবার যখন খাবারের ওপর বসে তখন মাছির মুখ ও পা থেকে সেই জীবাণু নিমিষে খাবারে লেগে যায়। আবার, মাছি সলিড ফুড খাওয়ার সময় সেটাকে নরম করার জন্য লালা নিঃসরণ করে, সেই লালা থেকে জীবাণু খাদ্যে লেগে যায়। মানুষ এই মল-বর্জ্য তথা জীবাণু লেগে যাওয়া দূষিত খাবার খায় এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই চক্রটি বারবার চলতে থাকে।
Flies collect pathogens on their legs and mouths when females lay eggs on decomposing organic matter such as feces, garbage and animal corpses. House flies carry diseases on their legs and the small hairs that cover their bodies. It takes only a matter of seconds for them to transfer these pathogens to food or touched surfaces. Mature house flies also use saliva to liquefy solid food before feeding on it. During this process, they transfer the pathogens first collected by landing on offal.
সূত্রঃ https://www.orkin.com/flies/house-fly/house-fly-and-disease
 ইস্যু নং ০৬
 পেশায় চিকিৎসক নন এমন একজন কোরান অনুবাদকারী ও হাদীস ব্যাখ্যাকারী লেখক মুহম্মদ মুহসীন খান তার লেখা একটি বইয়ে মাছির ভেতরে থাকা বিভিন্ন জীবাণুগুলো (Microbiota) সম্পর্কে বলার চেষ্টা করেছেন যে অ্যান্টিডোট নাকি ব্যাকটেরিওফেজিক ভাইরাস নয় বরং ফাঙ্গাল ঈস্ট কোষ !
"longitudinal yeast cells living as parasites inside their bellies. These yeast cells, in order to perpetuate their life cycle, protrude through certain respiratory tubules of the fly. If the fly is dipped in a liquid, the cells burst into the fluid and the content of those cells is an antidote for the pathogens which the fly carries."
সূত্রঃ https://www.abc.se/home/m9783/ir/h/hof.html
গ্রন্থের নামঃ Meanings of Sahih al-Bukhari by Muhammad
Muhsin Khan (7:372, Book 76 Medicine, Chapter 58, Hadith 5782
ইনি চিকিৎসক বা বিজ্ঞান গবেষক কিছুই নন। ইনি জানেনই না যে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে অ্যান্টিবায়োটিক কতটুকু পরিমাণে দরকার হয়। ছোট্ট একটা মাছির শরীরে কতটুকুই বা ফাঙ্গাল ঈস্ট কোষ থাকে ? সেই থেকে কতটুকুই বা ব্যাকটেরিয়ানাশক পদার্থ সৃষ্টি হতে পারে? আপনারা যেই অ্যান্টিবায়োটিক ক্যাপসুলগুলো খান, সেগুলোর ওজন কী একটি হাউজ ফ্লাই থেকে অনেক বেশি নয় ? যেমন – সিপ্রোফ্লক্সাসিন ৫০০ মিগ্রা কিংবা সেফুরোক্সাইম ৫০০ মিগ্রা দিনে ২ বার ৭ দিন। ৭ দিনে তবে খাওয়া পড়ে ৭০০০ মিগ্রা = ৭ গ্রাম। আবার এই এন্টিবায়োটিকগুলো বিশুদ্ধ ও পরিশোধিত (Purified & Sterile) অবস্থায় থাকে, প্রকৃতিতে কী এরকম বিশুদ্ধ ও পরিশোধিত অবস্থায় কোন ব্যাকটেরিয়ারোধী খাদ্য বা কেমিক্যাল পাওয়া যায়? - যায় না, প্রকৃতিতে যা কিছু আছে, সবই মিশ্রিত বা অবিশুদ্ধ (Impurified & Unrefined) অবস্থায় থাকে।
 ইস্যু নং ০৭
 এছাড়াও এই অপব্যাখ্যা দানকারী মুসলিমগণ বিভিন্ন ভুলভাল রিসার্চ থেকে মাছির পাখায় প্রতিষেধক আছে – এমন অসত্য বক্তব্য প্রতিষ্ঠা করতে চান। আসুন দেখি -
These fly microbiota are bacteriophagic or "germ-eating". Bacteriophages are viruses of viruses. They attack viruses and bacteria. They can be selected and bred to kill specific organisms. The viruses infect a bacterium, replicate and fill the bacterial cell with new copies of the virus, and then break through the bacterium's cell wall, causing it to burst.
সূত্রঃ Science 292 (June 2001) p. 2326-2329.
পুরোই ভুল রিসার্চ কারণ –
ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী ব্যাকটেরিওফাজ একটি ভাইরাস যা স্বজাতি কোন ভাইরাসকে আক্রমণ করে না এবং সকল ব্যাকটেরিওফাজই Cell Wall ধ্বংসকারী Protein Encode করে না।
As mentioned in an earlier section, bacteriophages are viruses that only infect bacteria
সূত্রঃ https://goo.gl/gdtVJk
 ইস্যু ০৮
 ভুল বক্তব্য সংবলিত এই একই আর্টিকেলে বলা হয়েছে –
The existence of similar bacteria-killing mechanisms in two bacteriophages suggests that antibiotics for human infections might be designed on the basis of these cell wall-destroying proteins.
যার অর্থ হচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিক নাকি ব্যাকটেরিওফাজ ভাইরাসের ব্যাকটেরিয়াল সেল ওয়াল ধ্বংসকারী প্রোটিনের ভিত্তিতে সৃষ্টি করা হয়েছে যা মূর্খতার সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করা একটি হাস্যকর বক্তব্য !
কারণ, ব্যাকটেরিওফাজ হচ্ছে প্রকৃতি ও জীবে পাওয়া Natural Virus আর অ্যান্টিবায়োটিক কোন ভাইরাস নয় বরং Purified Synthetic Chemical that kills Bacteria। কিসের মধ্যে কী, পান্তা ভাতে ঘি !
যেখানে অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যাকটেরিওফাজের কোন সম্পর্ক নেই, সেখানে নবীর এমন উদ্ভট বক্তব্যের সপক্ষে সাফাই গাইতে উভয়ের মধ্যে গোঁজামিল দেওয়া একটি সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করা অজ্ঞতার নির্লজ্জ প্রদর্শন ছাড়া আর কী ? 
♨ উপসংহারঃ
৮টি ইস্যুর বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক আলোচনা ও তৎসংশ্লিষ্ট তথ্যসূত্রের মাধ্যমে এটি পানির মত পরিষ্কার যে,
✅ ১) মাছির দেহে অ্যান্টিডোট থাকে, পাখায় নয়, ফলে পাখা ডোবানোর কোন তাৎপর্য নেই।
✅ ২) অ্যান্টিডোটের পরিমাণ অত্যন্ত নগণ্য ও মাছির জন্য সুনির্দিষ্টভাবে প্রযোজ্য, মানুষের জন্য নয় কারণ এই অ্যান্টিডোট বিশুদ্ধ ও পরিশোধিত অবস্থায় থাকে না।
✅ ৩) মাছি পানীয়তে পড়লে জীবাণু ও মাছির জন্য সুনির্দিষ্ট অ্যান্টিডোট উভয়েই পানীয়তে মিশে যায় ফলে পানীয় দূষিত হয়।
১ গ্লাস দুধের মধ্যে ১ ফোঁটা বিষ মেশালে যেমন সেই দুধ আর খাওয়া চলে না, তেমনি মাছির জীবাণু পানীয়তে চলে গেলে সেই পানীয় আর খাওয়া চলে না – এই সহজ সত্য অনুধাবন করতে কমন সেন্স রয়েছে এমন কারোরই বেগ পাওয়ার কথা নয়। 
©মুশফিক ইমতিয়াজ চৌধুরী

Comments

Popular posts from this blog

ডিসি বা ডেপুটি কমিশনার কেন জেলা প্রশাসক - ড. আমিন

মূর্তি ও ভাস্কর্য - ডঃ আমিন

আইনস্টাইনের পাঁচ বাড়ির ধাঁধা: মৎস্যাধারের মাছ চুরি করেছে কে?